পাঁচ কিলোমিটার সড়কে পাঁচ সহস্রাধিক গর্ত যান চলাচলে চরম দূর্ভোগ
[লাকসাম দৌলতগঞ্জ -চৌদ্দগ্রাম সড়ক]
![](https://amaderlaksam.com/wp-content/uploads/2021/07/USER_SCOPED_TEMP_DATA_orca_share_media1625647672459_6818460535187312139-780x470.jpeg)
শহীদুল ইসলাম শাহীন:
লাকসাম দৌলতগঞ্জ-চৌদ্দগ্রাম ২১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে দৌলতগঞ্জ থেকে নরপাটি পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কে পাঁচ সহস্রাধিক ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে যান চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীরও চলাচলকারীদের বর্ষার শুরুতে এ সড়ক এখন মৃত্যুকুপ। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ও ভ্যান চলাচল বন্ধপ্রায়। ফলে তিনটি উপজেলার ও ইউনিয়নের বাজারে মালামাল সরবরাহ করা দুরূহ হয়ে পড়ছে।
বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, লাকসাম-চৌদ্দগ্রাম সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ২১ কিলোমিটার এবং প্রশস্ততা ১৮ ফুট। লাকসাম পৌরশহর, নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় সড়কটির অবস্থান হওয়ায় তিন উপজেলার মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে সড়কটিতে চলাচল করেন।
এই ২১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজার, পূর্ব লাকসাম, গন্ডামারা,কাদ্রা,ভোজপাড়া,গুনতি,তেলিপাড়া, গাইনেরডরা ও নরপাটি বাজার পযন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কে ছোট-বড় পাঁচ সহ¯্রাধিক গর্তের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের দুরবস্থার কারণে মালবাহী ট্রাক, ট্রাক্টর, কাভার্ডভ্যান, যাত্রীবাহী যানবাহনগুলোকে নাকাল হতে হচ্ছে। অনেক সময় গর্তে গাড়ি আটকে যাওয়ায় ধাক্কা দিয়ে গাড়ি উঠাতে হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যাত্রীদের গাড়ি থেকে নেমে গর্ত পার হতে হচ্ছে। এ্যাম্বুলেন্সবাহী রোগীদের সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর ২০১৫ অর্থবছরে এই সড়কটি পুনর্র্নিমাণ করে। বর্ষার শুরুতেই সড়কটিতে ছোট-বড় পাঁচ হাজার গর্ত এবং খানাখন্দ একে মারণফাঁদে পরিণত করেছে। যান চলাচলে পুরোপুরি অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়কটি। বর্ষায় গর্তে পানি জমে যান ও জনসাধারণের চলাচলে দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় অনেকে অভিযোগ করেন, ২০১৫ সালে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর সড়কটি পুনঃসংস্কারের সময় সাব-ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর যোগসাজশে নিম্নমানের কাজ করায় সড়কটি গর্ত ও খানাখন্দে ভরে গেছে।
বর্তমানে সড়কটি এক অসহনীয় দুর্ভোগের নাম। এ সড়কে পৌরসভার উপজেলার ইউনিয়নের সাতটি গ্রাম ছয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং রাস্তার দুপাড়ের ১০ টি মসজিদ ও চারটি বাজারে যাতায়াতে এ সড়কই ভরসা। এই বর্ষায় মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। মালামাল সরবরাহে দুর্ঘটনাও ঘটছে মাঝেমধ্যে। পণ্যবাহী ট্রাক উল্টে সড়কের পাশে পড়ার ঘটনাও ঘটছে।
কাদ্রা এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ী আলহাজ্ব খোরশেদ আলম বলেন, সড়কের পাশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গাড়ি নিয়ে মালামাল আনা নেওয়া খুবই কষ্ট কর। অতিশিগগিরই পুনর্র্নিমাণ বা সংস্কার না করা হলে এই অঞ্চলের মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
নরপাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবল আলম বলেন, লাকসামের অংশে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় মানুষকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বেশিরভাগ সময়েই সড়কের বড় বড় গর্ত সমূহে যানবাহন আটকে যাচ্ছে। চলাচলে ঝুঁকি থাকায় যাত্রীদের গাড়ি থেকে নেমে ঝূঁকিপূর্ণ এলাকা পার হতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর লাকসাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-সহকারি প্রকৌশলী আজিম উদ্দিন বলেন, লাকসাম- চৌদ্দগ্রাম সড়কটি এক অংশের কাজ হয়েছে। বাকি অংশ সড়কটির সংস্কার কাজের টেন্ডার হয়েছে। অন্য অংশের কাজও সহসা শুরু হবে বলে আশা রাখছি। সড়কের যেখানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো দ্রুত ভরাট করে চলাচল উপযোগী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ক্যাপশন: লাকসাম-চৌদ্দগ্রাম সড়কে গাইনেরডরা এলাকায় যানবাহন চলাচলের সময় এভাবেই গর্তে আটকে যাচ্ছে।