ওয়াজ মাহফিলে কোনো উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া যাবে না-ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
ওয়াজ মাহফিলে কোরআনের বাইরে উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য দেওয়া যাবে না। নীতি-নৈতিকতা-মূল্যবোধ লালন ও ধারণ করা আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য। সবাইকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে এবং এটি তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িতে দিতে হবে বলেছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো.ফরিদুল হক খান। সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে ভোলা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকের বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি একটি কাঙ্ক্ষিত বিষয়, যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এদেশে যে কোনো মূল্যে বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতি যুক্ত করে বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে গেছেন।
রাসুল (স.) ও সব ধর্ম অবমাননাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির বিধান রেখে সংসদে আইন পাসের বিষয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক চক্র কাজ করছে এবং সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা কোনো ধর্মের নয়, গোত্রের নয়, বর্ণের নয়। এই লোকগুলোকে চিহ্নিত করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যারা ইসলাম অবমাননা এবং সম্প্রীতি নষ্ট করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আইন সবার জন্য সমান।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষের সমন্বয়ে বৈচিত্র্যময় এক শান্তিপ্রিয় দেশ। প্রতিটি ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে, শান্তির বার্তা পৌঁছে দেয়। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিষয়টি কোনো ধর্মই সমর্থন করে না। প্রত্যেক ধর্মের অনুসারীর কাছে তার ধর্ম শ্রেষ্ঠ, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র বিষয়। এছাড়া প্রতিটি ধর্মের মূল বিষয়গুলোতে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। সেই সাদৃশ্যসমূহকে অবলম্বন করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধি করতে হবে।
ফরিদুল হক খান বলেন, ধর্মের নামে উগ্রবাদ, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ একটি ঘৃণ্য বিষয়। বাংলাদেশের মাটিতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। সকলের সহযোগিতায় ধর্মীয় উগ্রবাদ, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করা হবে। এক্ষেত্রে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকবিরোধী কথা বললে সমাজে তার ইতিবাচক সুফল পাওয়া যাবে।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো. তৈফিক -ই-লাহী চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবদুল্লাহ আল শাহিন, জেলা প্রশাসকের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার শাখা) রাজিব আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুজিত কুমার হালদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মামুন আল ফারুক, জেলার সাত উপজেলার উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলার মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।