‘ভয়ঙ্কর’ ঘাতক মা চম্পা!
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা পৌর এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত শিশু পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে জেলা ডিবি পুলিশ। লাশটি ছিল সুচি নামে ছয় বছরের এক শিশুর। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এই লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
বিস্ময়ের বিষয় হলো সুচির ঘাতক তার নিজেরই মা চম্পা। গত সোমবার গাইবান্দা থেকে মা চম্পাকে আটকের পর ডিবি পুলিশ এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে। চম্পা বর্তমানে ময়মনসিংহ কারাগারে। এর আগে চম্পা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। মঙ্গলবার ময়মনসিংহের ২নম্বর আমলী আদালতে হাজির করা হলে তিনি বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজ আল আসাদের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে জানা যায়, দাদীর কাছে থাকতে চাওয়ায় মার নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে ৩-৪ দিন পর সুচি মারা গেলে তার লাশ বগুড়া থেকে মুক্তাগাছা শহরে ফেলে যান মা চম্পা।
জেলা ডিবি’র ওসি শাহ কামাল বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ৯টার দিকে মুক্তাগাছা পৌরসভার রহিমা জান্নাতুল জামে মসজিদের পাশে এক অজ্ঞাত শিশুর লাশ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে দায়ের হওয়া মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান জেলা ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দেন। মামলার তদন্ত শুরু করেন ডিবি এসআই পরিমল চন্দ্র সরকার। তদন্তের এক পর্যায়ে তিনি লাশের পরিচয় সনাক্ত করেন এবং ভিকটিমের মা চম্পাকে গাইবান্দা থেকে গ্রেপ্তার করেন। এরপরই জানা যায় প্রকৃত ঘটনা।
ডিবি পুলিশ জানায়, নিহত শিশু সুচি তার পালিত বাবা সাইফুলের কাছে থাকতো। জামালপুরে দাদীর কাছে আদর সোহাগে বড় হচ্ছিল সুচি। মা চম্পা তিন বছর আগেই সাইফুলকে রেখে বগুড়া চলে যান। চম্পা বগুড়াতেই বসবাস করতেন। প্রায় এক মাস আগে চম্পা জামালপুরে এসে জোর করে মেয়ে সুচিতে নিয়ে বগুড়া নিয়ে চলে যান। কিন্তু সুচি জামালপুরে ফিরে আসতে চাইতো। এজন্য প্রায়ই সুচিকে নির্যাতন করতো তার মা চম্পা। কয়েকদিন আগে নির্যাতনের এক পর্যায়ে মাথায় আঘাত লাগে সুচির। এরপর অসুস্থ সুচিকে বগুড়া হাসপাতালে ভর্তি করে চম্পা। কিন্তু সুচি মারা গেলে চম্পা মরদেহটি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় নিয়ে এসে সড়কের পাশে ফেলে রেখে যায়।