আন্তর্জাতিক

ভয়ংকর তাণ্ডব চালাতে পারে টাইফুন কং-রে

পূর্ব এশিয়ার তাইওয়ানের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার টাইফুন কং-রে। এই প্রলয়ঙ্করী ঝড় ঘণ্টায় ২৪০ কিমি (প্রতি ঘণ্টায় ১৫০ মাইল) বেগে এগোচ্ছে। টাইফুনটি যখন ভূমিতে আঘাত করবে, তখন এর ঢেউ ৮ মিটার উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে, যা গোটা দ্বীপকে লণ্ডভণ্ড করে দিতে পারে। কং-রে ফিলিপাইন সাগরের উপর দিয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং এটি বুধবার সুপার টাইফুনে রূপ নেয়।সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কং-রে ক্যাটাগরি-৪ মাত্রার আটলান্টিক হারিকেনের সমান শক্তি অর্জন করেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে এটি তাইওয়ানের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের কম জনবসতিপূর্ণ কাউন্টি তাইটুং-এ আঘাত হানতে পারে।তাইওয়ানের আবহাওয়া সংস্থার আবহাওয়াবিদ চু মেই-লিন জানিয়েছেন, ঝড়টি উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোলেও রাতের শেষের দিকে গোটা তাইওয়ানে ঝড়ের তাণ্ডব শুরু হতে পারে। মঙ্গলবার যখন ঝড়টি কাছাকাছি আসছিল, তখন কেন্দ্রীয় আবহাওয়া প্রশাসন (সিডব্লিউএ) সমুদ্র সতর্কতা জারি করে। বুধবার দুপুরের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি কাউন্টির জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

চু বলেন, “শক্তিশালী ঝড়টি দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে আঘাত করার আগে কিছুটা দুর্বল হতে পারে, কিন্তু এটি প্রবল বৃষ্টিপাত, জলোচ্ছ্বাস এবং ভূমিধসের ঝুঁকি নিয়ে আসবে।” তিনি সকলকে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে সতর্ক করেছেন।টাইওয়ান কর্তৃপক্ষ পূর্ব উপকূলের বাসিন্দাদের কং-রের আক্রমণ থেকে নিরাপদে থাকার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার তাইপে সহ বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উদ্ধার ও ত্রাণকাজে সহায়তার জন্য প্রায় ৩৬ হাজার সেনা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।এদিকে, এএফপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে কং-রে তাইওয়ানে আঘাত হানতে পারে। এর ফলে কর্তৃপক্ষ দূরবর্তী দ্বীপগুলোর বাসিন্দাদের পেশাগত ও শিক্ষাগত কার্যক্রম স্থগিত করতে সতর্ক করেছে।

জেলেরা ইতিমধ্যে নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন।মার্কিন নৌবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৩০০ কিমি পর্যন্ত উঠতে পারে, যা ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাইওয়ানের আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে, কং-রে পূর্ব ও উত্তর উপকূলীয় অঞ্চলে এবং মধ্য ও দক্ষিণের পাহাড়ি এলাকায় বেশি বৃষ্টিপাত ঘটাবে। পূর্বাভাসে ইলান এবং হুয়ালিয়েনের পূর্ব অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়েছে, যেখানে ৮০০ থেকে ১,২০০ মিলিমিটার (৩১ থেকে ৪৭ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হতে পারে।

তাইতুং অঞ্চলের দুটি প্রধান দ্বীপে পেশাগত ও শিক্ষাগত কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া, তাইওয়ানের দূরবর্তী দ্বীপ কিনমেন ও চীনের জিয়ামেনের মধ্যে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় দেখা দেয়, তবে বছরের শেষে এত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আসা অস্বাভাবিক।বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে জলবায়ু পরিবর্তন ঝড়ের তীব্রতা বাড়াচ্ছে, ফলে ভারী বৃষ্টিপাত এবং আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে ঘূর্ণিঝড় ক্র্যাথন আঘাত হানে, যার ফলে চারজন নিহত হয়।

Show More

Related Articles

Back to top button