ইসলাম

জুমআর দিনের বিশেষ মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব

জুমার দিন উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে উপহারস্বরূপ। শুক্রবার দিনটিকে আরবিতে বলা হয় ‘ইয়াওমুল জুমুআহ’। জাহিলি যুগে এ দিনটি ‘ইয়াওমুল আরুবাহ’ নামে পরিচিত ছিল। এর আরো নাম আছে। যেমন—১. সায়্যিদুল আইয়্যাম, ২. আফজালুল আইয়্যাম, ৩. ইয়াওমুল আজহার ও ৪. ইয়াওমুল আতিক।

তবে পবিত্র কোরআনে এ দিনটিকে ‘ইয়াওমুল জুমুআহ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এখানে জুমার দিনের শ্রেষ্ঠত্ব ও বিশেষত্ব আলোচনা করা হলো—

যেসব কারণে শ্রেষ্ঠ শুক্রবার

আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার : আল্লাহ অন্য নবী-রাসুল ও তাঁদের উম্মতদের চেয়ে আমাদের উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য এ দিনটিকে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে মনোনীত করেছেন।

সগিরা গুনাহ মোচন করা হয় : কোনো মুসলিম যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং জুমার নামাজ নিয়মিত আদায় করে আর কবিরা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে, তাহলে শুক্রবারের শ্রেষ্ঠত্বের কারণে দুই জুমার মধ্যবর্তী সব সগিরা গোনাহ মোচন করে দেওয়া হয়। (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)

কবরের আজাব লাঘব করা হয় : শুক্রবার মৃত্যুবরণ করা প্রকৃত মুসলিমের সৌভাগ্যের নিদর্শন। কেননা শুক্রবারের বরকতে এ দিনে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি কবরের আজাব থেকে মুক্তি লাভ করেন। হাদিসের ভাষায়, জুমার দিনে অথবা রাতে কোনো মুসলিম ব্যক্তি যদি মৃত্যুবরণ করে, তাহলে মহান আল্লাহ তাকে কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা করেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৭৪)

পরকালে আমাদের অগ্রগামী হওয়ার নিদর্শন : কিয়ামতের দিন অন্য নবীদের উম্মতদের চেয়ে আমরা থাকব সর্বদিক থেকে অগ্রগামী। রাসুল (সা.) বলেছেন, আমরা সর্বশেষ উম্মত; কিন্তু কিয়ামতের দিন আমরা হব অগ্রগামী। যদিও সব উম্মতকে কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের আগে আর আমাদের দেওয়া হয়েছে সবার শেষে। (মুসলিম, হাদিস : ১৮৬৩)

শুক্রবারের রয়েছে পাঁচটি বিশেষত্ব : স্রষ্টার পক্ষ থেকে শুক্রবার শুধু উপহারই নয়; বরং আল্লাহ তাআলা দিনটিকে নানা বিশেষত্বে ভরপুর করে দিয়েছেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ১. এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। ২. তাঁকে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে। ৩. এই দিনেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ৪. এই দিনে এমন একটি সময় আছে (আসরের পর), এই সময়ে কেউ হারাম জিনিস ছাড়া অন্য কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা মঞ্জুর করেন। ৫. আর এ দিনই কিয়ামত সংঘটিত হবে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)

সুরা কাহফ দুই জুমার জ্যোতি : আল্লাহ এ দিনে আর একটি বিশেষ অফার দিয়েছেন সুরা কাহফের তিলাওয়াতের মধ্যে। যে ব্যক্তি বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর থেকে শুক্রবার সূর্যাস্তের মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে সুরা কাহফ তিলাওয়াত করবে তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়টি আলোকিত থাকবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময় জ্যোতির্ময় হবে। (বাইহাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৫৯৯৬)

আমাদের উচিত, এ বরকতপূর্ণ দিনে বেশি বেশি ইবাদত করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা।

 

সূত্র : বিডি-প্রতিদিন

Show More

Related Articles

Back to top button