কুমিল্লা জেলালাকসাম

লাকসামে বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টেন্ডার ছাড়াই সামাজিক বনায়নের গাছ বিক্রির অভিযোগ

শহীদুল ইসলাম শাহীন
লাকসাম উপজেলা বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টেন্ডার ছাড়াই লাকসাম-মুদাফরগঞ্জ সড়কের দুই পাশের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
ওই সড়কে সামাজিক বনায়নের সুবিধাভোগি মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান, লাকসামের রাজঘাট থেকে মুদাফরগঞ্জ পর্যন্ত সাড়ে ১০ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারনের অযুহাতে বন কর্মকর্তার যোগসাজশে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির কয়েক কোটি টাকার গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ২০ বছর আগে সড়কের মজুমদা থেকে ধানকুইয়া পর্যন্ত এক কিলোমিটার অংশের দুই পাশে প্রায় ৩শ গাছ লাগানো হয়। এগুলোর মধ্যে ছিল মেহগনি, রেইনট্রি, শিশু, অর্জুনসহ কয়েক প্রজাতির গাছ। ওই সময় ১২ জন সুবিধাভোগীর কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা করে নেয়া হয়। কিছুদিন আগে সড়ক সম্প্রসারনের অযুহাতে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়। তখন বন কর্মকর্তা আমাদের ন্যায্য প্রাপ্য প্রদানের আশ্বাস দেন। কিন্তু এখন আমাদের পাত্তা দিচ্ছেন না
এদিকে, বিশাল এলাকা গাছশুন্য হওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ। ক্ষুব্ধ হয়ে বারবার অভিযোগ-প্রতিবাদ জানিয়েও ফল পায়নি স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের রাজঘাট থেকে মুদাফরগঞ্জ পর্যন্ত সাড়ে ১০ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশের গাছ উধাও হয়ে গেছে। এ পথে নিয়মিত যাতায়াতকারী লোকজন বলেন, এসব মূল্যবান গাছ কেটে নেয়া  ও বিক্রি তদারকি করেছেন উপজেলা বন সম্প্রসারণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিপন। গাছ কাটার সঙ্গে সঙ্গেই তা বিক্রি করে দেয়া হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির অধীনে রোপণ করা ২০-২১ বছর আগের গাছ কেটে ফেলা হয় টেন্ডার ছাড়াই। এতে প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় সামাজিক বনায়ন কমিটি ও সুবিধাভোগী লোকজন।
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, সাড়ে দশ কিলোমিটার সড়কের দু’পাশে অন্ততঃ তিন হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়। গড়ে পাঁচ হাজার টাকা হলেও গাছগুলোর মূল্য দাঁড়ায় দেড় কোটি টাকা। তারা বলেন, কোন কোন গাছের বাজার মূল্য ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হবে।
সামাজিক বনায়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসদূর রহমান বলেন, সড়ক সংস্কারের কারণে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়। আমাদের কেউ জিজ্ঞেসও করেনি। উপরন্তু আমরা জানতে চাইলে বন কর্মকর্তা টেন্ডার না হলেও আমাদের ন্যায্য পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেবেন বলে চুপ থাকতে বলেন।
উপজেলা বন সম্প্রসারণ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোয়াজ্জেম হোসেন শিপন বলেন, সড়ক সম্প্রসারন করার জন্য ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌ স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এক্ষেত্রে ওই এলাকার লোকজন ভুল বুঝতে পারে।
এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা সামাজিক বনায়ন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল কবির জানান,
লাকসামের রাজঘাট থেকে মুদাফরগঞ্জ সড়কের গাছ কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। সড়কের গাছ কেটে ফেলার বিষয়ে আমাকে জানানো হয়নি। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Show More

Related Articles

Back to top button