দেশজুড়ে

নৌকা ভ্রমণে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নববধূ

নৌকা ভ্রমণে গিয়ে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার টিক্কাপুর হাওরে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নববধূ। ওই সময় তাদের বাধা দিলে ধর্ষণের শিকার নববধূর স্বামী ও তার বন্ধুকে বেধড়ক মারধর করেছে তারা।

এমনকি ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করেছে অভিযুক্তরা। ওই ঘটনা কাউকে জানালে সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে ধর্ষণের শিকার নববধূ ও তার স্বামীকে। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ভুক্তভোগীরা।

বুধবার রাতে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে এভাবেই ধর্ষণ ও মারধরের বর্ণনা দেন ধর্ষণের শিকার নববধূ ও তার স্বামী।ভুক্তভোগীর স্বামী জানান, মাসখানেক পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।

বিয়ের একদিনের মাথায় তিনি কাজের সুবাদে চলে যান ঢাকায়। কদিন আগে বাড়ি ফিরেন। গত ২৫ আগস্ট দুপুরে স্ত্রী ও এক বন্ধুকে নিয়ে হাওরে নৌকা ভ্রমণে যান তিনি।

এক পর্যায়ে তাদের গ্রামেরই মুছা মিয়া, সুজাত মিয়া, হৃদয় মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া ও জুয়েল মিয়াসহ ৫-৬ জন যুবক তাদের নৌকার গতিরোধ করে। এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে ও তার বন্ধুকে মারধর ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তারা।

তিনি আরো জানান, ধর্ষকরা ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। পরে ঘটনাটি কাউকে না জানাতে হুমকি দেয় এবং বিষয়টি জানাজানি হলে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়। বাড়ি ফিরে লোকলজ্জা ও ভিডিও ছড়ানোর ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানাননি তারা।

জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে ধর্ষকরা নতুন করে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছিল। এক পর্যায়ে ভিডিওটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ধর্ষণের শিকার নববধূ ও তার স্বামী হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

লাখাই থানার ওসি মো. সাইদুর রহমান জানান, খবর পেয়েই ভুক্তভোগী ওই দম্পতির সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে এখনো লিখিত অভিযোগ আসেনি।

অভিযোগ পেলেই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ভুক্তভোগী নববধূর ডাক্তারি পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আরএমও ডা. নাদিরা বেগম।

নববধূকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনার ছয়দিন পর মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় র‌্যাব এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নববধূর স্বামী বাদী হয়ে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

বিচারক জিয়াউদ্দিন মাহমুদ মামলাটি আমলে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এফআইয়ার করতে লাখাই থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।মামলার আসামিরা হলেন

মোড়াকড়ি গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে মুছা মিয়া (২৬), ইব্রাহীম মিয়ার ছেলে মিঠু মিয়া (২১), পাতা মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (২২), বকুল মিয়ার ছেলে সুজাত মিয়া (২৩), মিজান মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া (২৫), ইকবাল হোসেনর ছেলে সোলায়মান রনি (২২), ওয়াহাব আলীর ছেলে মুছা মিয়া (২০), রুকু মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া (১৯।

এদিকে, এ ঘটনায় র‌্যাব এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে। তবে তাৎক্ষণিক নাম পরিচয় জানায়নি র‌্যাব।মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইন হাফিজুল ইসলাম।

Show More

Related Articles

Back to top button