জাতীয়

পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় না দেখার সুপারিশ

পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় না দেখতে সুপারিশ করবে পুলিশ সংস্কার কমিশন। এক্ষেত্রে এনআইডি কার্ড হবে ভেরিফিকেশনের মানদণ্ড। এমনটি জানিয়েছেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সফর রাজ হোসেন।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার নিজ দফতরে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের কমিশনের চেয়ারম্যান এ তথ্য জানান।পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, পুলিশ সংস্কার কমিশন পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় না দেখার সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে এনআইডি কার্ড হতে পারে ভেরিফিকেশনের মানদণ্ড।কমিশন প্রধান বলেন, একটি বিষয়ে সবাই প্রাথমিকভাবে একমত হয়েছেন যে বাংলাদেশে সরকারি, বেসরকারি ও আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য সবারই পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হয়।

এই ভেরিফিকেশনের যে পদ্ধতি এটা ১৯২৮ সালের। দীর্ঘদিন ধরে এটা চলে আসছে। যে কারণে অনেক চাকরিপ্রার্থী বাদ পড়ে যায়। আরেকটি বিষয় ছিল চাকরিপ্রার্থীর আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কেউ রাজনীতি করে কিনা। রাষ্ট্রবিরোধী কেউ আছে কিনা। এটা ব্রিটিশরা করেছিল। বিগত বছরগুলোতে বিশেষ করে সম্প্রতি এমন অভিযোগ এসেছে, রাজনৈতিক কারণে এবং আত্মীয়-স্বজন রাজনীতি করেন, সরকারি দল করেন না। এমনকি খালা, খালু, ফুফা সরকারি দলের বিপরীতে রাজনীতি করেন।

তিনি বলেন, এমন অনেকের ক্ষেত্রেই এসব যুক্তি দেখিয়ে তাদের চাকরি দেওয়া হয়নি। পুলিশ সংস্কার কমিশন এসব বিষয় বাদ দিতে চায়। আরেকটা নিয়ম আছে, স্থায়ী ঠিকানায় আমার নামে সম্পত্তি আছে কিনা। এটাও নাকি চাকরির ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হতো। আমরা এটাও চাই না। আমরা বলেছি, প্রথম ডকুমেন্ট হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র। সরকার এটা আইনের মাধ্যমেই একজন নাগরিককে দিয়েছে। এটার ভিত্তিতেই ঠিক করতে হবে।

সফর রাজ হোসেন বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া তো কেউ চাকরি পাওয়ার কথাও নয়। ১৮ বছর পর জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার কথা। এটা দেওয়ার সময়েই সবকিছু তদন্ত করার কথা। অনেকে বলেন, অনেক চাকরি আছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। কেন তদন্ত করতে হবে। কোনও চাকরিকেই গুরুত্বপূর্ণ নয় এটা বলা যাবে না। সব চাকরিই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন ভুয়া লোক নাম-ঠিকানা পাল্টিয়ে যদি চাকরিতে ঢুকে, পরবর্তীকালে যদি দুর্বৃত্তায়নের সঙ্গে জড়িত হয়ে যায়, সব বিষয় নিয়েই আমরা আলোচনা করেছি।

মানুষের হয়রানি যাতে কমে। ভেরিফিকেশন হবে, সবই হবে। তবে রাজনৈতিক পরিচয়গুলোর বিষয় বাদ দেওয়া হবে।পুলিশ আইনের বিষয়ে তিনি বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় পুলিশ কোনও ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার করতে পারে। আরেকটা বিষয় হলো যে আইনে পুলিশ রিমান্ডে নেয়। এ দুটো বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও নিতে পারে না।

এটার মালিক আইন মন্ত্রণালয়। এসব নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলাও আছে। এসব আইন ব্যবহারে সরকারের অনেক পরামর্শ মেনে চলতে হবে বলে উচ্চ আদালত থেকে বলা হয়েছে। পরে আবার সরকার অ্যাপিলেট ডিভিশনে যায়। এটা পুলিশ রেগুলেশনে ঢোকানোর পরামর্শ থাকবে আমাদের।তিনি আরও বেলেন, পুলিশ গ্রেফতার করবে, ঠিক আছে।

কিন্তু কিছু নিয়ম কানুন মানতে হবে। হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী করতে হবে। কাউকে আটক বা গ্রেফতার করতে হলে তার স্বজনদের জানাতে হবে। যেমন- আন্দোলনের সময় ছয় জন শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ডিবিতে রাখা হয়েছিল। কাউকে কিছু জানানো হয়নি। রিমান্ডে নির্যাতনের তো কোনও নিয়মই নাই। আইনেই নাই।

Show More

Related Articles

Back to top button