দেশজুড়ে

নিজাম হাজারীসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে এবার যুবলীগ নেতার মামলার আবেদন

হামলা, ভাংচুর, বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে ও ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনীর সাবেক পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকারসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ফেনী সদর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েদ মো. সাফায়াতের আদালতে সাবেক যুবলীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর শাখাওয়াত হোসেন ভূঁঞা বাদী হয়ে করা এ মামলার শুনানি হয়।পরে আদালত ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে (এডিএম) তদন্ত করে মামলার বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ নভেম্বর শাখাওয়াত হোসেন ভূঁঞা আদালতে অভিযোগটি দায়ের করেন। এতে ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ মধুপুরে গ্রামের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে ও ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন এ যুবলীগ নেতা। মামলায় ২৮ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

আগামী ২২ জানুয়ারি এ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।মামলায় আরও যাদের আসামি করার আবেদন করা হয়েছে তারা হলেন- ফেনী পুলিশের তৎকালীন বিশেষ শাখার (ডিএসবি) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আমিনুল ইসলাম, ফেনী মডেল থানা পুলিশের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন ওসি (ডিবি) রাশেদ খান চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন হাজারীর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী পুলিশের উপ-পরিদর্শক নজরুল ইসলাম,

উপ-পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান, ফেনী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আজিজ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শেখ আবদুল্লাহ, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, জেলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শরীফ উল্যাহ, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক হাজারী ও পৌর যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিটু।মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়,

নিজাম হাজারী অস্ত্র মামলায় সাজা কম খেটে জালিয়াতির মাধ্যমে বের হয়ে ফেনী পৌরসভার মেয়র ও সদর আসনের এমপি হন। এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। এ ঘটনায় নিজাম হাজারী ক্ষুদ্ধ হয়ে তাকে গুম-খুনের পরিকল্পনা করে। ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ ফেনী এলে তার বাড়ি থেকে আটক করে অমানষিক নির্যাতন করে। বাধা দিলে তার বৃদ্ধ মাকে শারীরিকভাবে আঘাত করে। এ সময় ঘরে ব্যাপক ভাংচুরসহ ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ এক লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

পরবর্তীতে তাকে চোখ বেঁধে হত্যার উদ্দেশ্যে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এলোপাতাড়ি পেটানোর পর তাকে ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।তিনি আরও উল্লেখ করেন, থানায় নেওয়ার পর পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকারের নির্দেশে এএসপি আমিনুল ইসলাম তাকে বেদম মারধর করে। সেই দৃশ্য এসআই নজরুল ইসলাম ভিডিও কলে নিজাম হাজারীকে লাইভ দেখায়।

পরবর্তীতে নিজাম হাজারীর নির্দেশনা অনুযায়ী এএসপি আমিনুল, ওসি আজাদ ও রাশেদের নেতৃত্বে শাখাওয়াতকে চোখ বেঁধে ক্রসফায়ারের উদ্দেশ্যে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে এএসপি আমিনুল ইসলামকে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে তিনি প্রাণে রক্ষা পান।সেই সময়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা গাড়ি পোড়ানোর মামলাসহ তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

Show More

Related Articles

Back to top button