শিক্ষা

পাঠ্যবইয়ে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ জিয়াউর রহমান, যুক্ত হচ্ছে সাঈদ-মুগ্ধের অবদান

৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হচ্ছে মেজর জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা। পাশাপাশি অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে ১৯৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ছাত্রনেতা আবু সাঈদ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের অবদান। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানিয়েছে, ইতোমধ্যে বইয়ের পরিমার্জনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে, যা আগামী সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে।

পূর্বের শেখ হাসিনা সরকারের টানা তিন মেয়াদের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একতরফা উপস্থাপনের অভিযোগ করেছেন ইতিহাসবিদরা। তাদের মতে, স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা বহু বীরকে যথাযথ সম্মান দেওয়া হয়নি। তবে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পাঠ্যবইয়ের পরিমার্জন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

পরিমার্জনের খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২৬ মার্চ ১৯৭১ সালে মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে প্রথমবার স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। পরের দিন ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে তিনি পুনরায় স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তাজউদ্দিন আহমেদ, মাওলানা ভাসানীসহ মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা অন্যান্য নেতার ভূমিকাও এই বইয়ে তুলে ধরা হবে।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রিয়াজুল হাসান বলেন, “বহু গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যক্তিত্বদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। আবার অনেকের অতি মূল্যায়ন হয়েছে। প্রকৃত ইতিহাস সঠিকভাবে উপস্থাপন করতেই এই পরিমার্জন।”এছাড়া মাধ্যমিকের বাংলা সাহিত্য বইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের অবদানও অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।

নতুন সংস্করণের কিছু বইয়ের প্রচ্ছদে এবং কিছু অংশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের গ্রাফিতি বা দেয়ালচিত্রও স্থান পাচ্ছে।এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক রিয়াজুল হাসান আরও বলেন, “আমাদের পরিমার্জনের কাজ প্রায় শেষ। এখন শুধু কিছু সামান্য ঘষামাজা চলছে, যা ৭ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে।”শিক্ষা গবেষকরা বলেছেন, পাঠ্যবইয়ের পরিমার্জনে বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করা জরুরি, যাতে ইতিহাস সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, “ইতিহাসের প্রকৃত রূপ চর্চাকারী ও গবেষকদের মাধ্যমে এ কাজটি করানো উচিত, যেন সত্যিকার ইতিহাস তুলে ধরা যায়।”নতুন সংস্করণে পাঠ্যবইয়ের শেষের পাতায় থাকা শেখ হাসিনার ছবি ও উদ্ধৃতিগুলো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবর্তে সেখানে চিরন্তন কিছু বাণী সংযোজন করা হচ্ছে।

Show More

Related Articles

Back to top button