কুমিল্লা জেলানাঙ্গলকোট

সম্পত্তির লোভে বৃদ্ধ মায়ের পা ভাঙলো ছেলে!

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার মৌকরা ইউপির আলিয়ারা গ্রামের হাজারি বাড়ির মৃত. ছোয়াব মিয়ার স্ত্রী আমেনা বেগম নামের ৭৬ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা। তিনি হাউ মাউ করে কেঁদে বলেন, রাতে ঘুমাতে পারি না। অনেক ব্যাথা করে। হাটা-চলা একেবারে বন্ধ। ছেলে বা পুত্রবধূরা খাবার দিয়ে গেলে খাই, না হয় থাকতে হয় উপোস। অপরদিকে সরকারি ভাবেও কপালে কোন ভাতা জুটেনি তার।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আমেনা বেগম তার ছেলে নরুন নবীর ঘরে একটি রুমে খাটের ওপর শুয়ে আছেন। তার পাশে রয়েছে একটি চেয়ার ও ময়লা পরিস্কার করার পাত্র। সংসার জীবনে তার ৬ ছেলে ও ৩ মেয়ে রয়েছে। গত ৩০ বছর পূর্বে তার স্বামী ছোয়াব মিয়া মারা যান। অনেক কষ্ট করে ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার চালাতেন তিনি।

এখন ছেলেরা বিয়ে করে আলাদা আলাদাভাবে বসবাস করছেন। মেয়েদেরও বিবাহ হয়। তারাও রয়েছেন স্বামীর বাড়িতে। এরপর থেকে ছেলে মেয়েরা তেমন কোন খবর নেয় না। ধন সম্পদ বলতে তেমন কিছুই নেই। যা আছে তা নিয়ে ভাইদের মধ্যে চলছে বিরোধ।

তিনি আরো বলেন, চলতি বছরের গত ২৩ মে তার পঞ্চম ছেলে বেলাল হোসেনকে সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য জোর করে। এবং অকথ্য ভাষায় গাল মন্দ করে। এক পর্যায়ে সে রেগে গিয়ে ইট দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে বাম পা ভেঙে দেয়। এসময় ছেলে আবুল কালাম, দুলাল, নরুন নবী বাঁধা দিলে তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে তাদেরও আহত করে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তিনিও চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। এখন আর হাঁটতে পারেন না। হাটুর ব্যাথায় রাতে ঘুমাতে পানে না। বর্তমানে তিনি মানবতার জীবনযাপন করছেন।

এ বিষয়ে আভিযুক্ত বেলাল হোসেন জানান, এ ঘটনাটি মিথ্যা। মা পড়ে গিয়ে পা ভেঙে ফেলে। আমি জামিনে এসেছি। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মিমাংসার জন চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট থানার অফিসার ইনচার্জ আ স ম আব্দুন নুর জানান, মামলার আলোকে আসামিকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

Show More

Related Articles

Back to top button