জাতীয়

মুরাদের এমপি পদ থাকবে কিনা সিদ্ধান্ত স্পিকারের

প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের পদ শূন্য ঘোষণা নিয়ে রিটে হাইকোর্ট বলেছেন, এটি জাতীয় সংসদের স্পিকারের দায়িত্ব।

আদালত আরো বলেছেন, সংক্ষুব্ধ যেকোনো ব্যক্তি মুরাদ হাসানের সদস্যপদ চ্যালেঞ্জ করে সংসদের স্পিকারের কাছে আবেদন করতে পারেন। রিট আবেদনটি এই পর্যায়ে অপরিপক্ব।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। পরে আদালত আবেদনটি স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রাখেন।

৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ এ রিট করেন। রিট তার আসন শূন্য ঘোষণার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।

আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্র সচিবকে।

রিট আবেদনে জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের বর্তমান কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জুডিসিয়াল তদন্তের জন্য পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তার আসন শূন্য ঘোষণা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও টেলিফোন সংলাপ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না সেই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

ডা. মুরাদ হাসান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পরিবারের এক সদস্য সম্পর্কে বক্তব্য দেন। তার ওই বক্তব্যে নারী বিদ্বেষের অভিযোগ ওঠে। এরপর নায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার ফোনালাপ ফাঁস হয়। মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদ হাসানের ফোনে কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ফোনালাপে তিনি অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করেন। অশ্লীল ভাষায় মাহিকে তার সঙ্গে দেখা করার নির্দেশ দেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঠিয়ে তুলে আনার হুমকি দেন মুরাদ হাসান। এসব ঘটনায় বিভিন্ন দিক থেকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে তার এ ধরনের বক্তব্য ও মন্তব্য নিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

বেশকিছু দিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে মুরাদ হাসান আলোচনা-সমালোচনায় এসেছেন। গত ৬ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরে আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে মুরাদ হাসানের নারী বিদ্বেষী বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানিয়েছিলেন বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন। ওই দিন রাতেই প্রধানমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

পরদিন মঙ্গলবার সকালেই পদ থেকে পদত্যাগ করে পদত্যাগপত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠান মুরাদ হাসান। পরে মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একজন কর্মকর্তা পৌঁছে দেন। সেই পদত্যাগপত্রের সারসংক্ষেপ তৈরি করে সন্ধ্যায়  প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়।

প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিমন্ত্রী পদে মুরাদ হাসানের অব্যাহতির বিষয়টি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।

এর আগে, মুরাদ হাসানকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

Show More

Related Articles

Back to top button