নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর বাড়ি পরিদর্শনে লাকসামে মার্কিন রাষ্ট্রদূত
![amaderlaksam](https://amaderlaksam.com/wp-content/uploads/2021/09/laksam-nowab-780x470.jpg)
কুমিল্লার লাকসামের প্রাচীনতম নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর বাড়ি পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লাকসাম পৌর শহরের পশ্চিমগাঁওয়ে ডাকাতিয়া নদীর তীরঘেঁষা ঐতিহাসিক নবাববাড়িটি পরিদর্শনে নিজ উদ্যোগে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের সময় বাড়ির মূল ফটকে রাষ্ট্রদূতকে বরণ করেন প্রশাসন ও নেতৃবৃন্দ। এরপর নবাব ফয়জুন্নেছার অবদান ও কর্মকাণ্ডের নিদর্শনস্বরূপ বাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ ঘুরে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার। তার সফরকালে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট ইউনুছ ভুঁইয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সাইফুল আলম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার লাকসাম সার্কেল মহিতুল ইসলাম, ওসি মেজবাহ উদ্দিন ভুইয়া, পৌর মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের, ভাইস চেয়ারম্যান মহব্বত আলী, লাকসাম প্রেসক্লাবে সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রফিকুল ইসলাম হিরা,পৌর হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আকতার হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং নবাব পরিবারের উত্তরাধিকার ফজলে রহমান চৌধুরী ( আয়াজ),মাসুদুল হক চৌধুরীসহ স্থানীয় সাংবাদিক ও গন্যমান্য বৃক্তিরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলের কারুকার্য দিয়ে নির্মিত ভারতীয় উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা নবাব ও নারী আন্দোলনের প্রথম অগ্রদূত নবাব ফয়জুন্নেছার স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক এ বাড়িটি চমৎকার একটি স্থাপত্য, যা দক্ষিণ এশিয়ার সৌন্দর্যমন্ডিত বাড়িগুলোর অন্যতম। স্মৃতিবিজড়িত এ বাড়িটি বছরের পর বছর অরক্ষিত থাকলেও সাম্প্রতিক এটিকে আকর্ষণীয় প্রত্নপর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রায় ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বরাদ্দ পেলেই বদলে যেতে শুরু করবে বাড়িটি। সৌন্দর্যমন্ডিত বাড়িটি ঘিরে দেখা দিতে পারে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা। কুমিল্লা জেলার লাকসাম পৌরশহরের পশ্চিমগাঁওয়ে ডাকাতিয়া নদীর তীর ঘেঁষে অপূর্ব সৌন্দর্যের লীলাভূমি ঐতিহাসিক নবাব ফয়জুন্নেছার বাড়ির অবস্থান। ঐতিহ্যের ধারক বাড়িটির নির্মাণসাল নিয়ে মতান্তর রয়েছে। কথিত আছে, উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর বিয়ের ১৭ বছর পর তিনি জানতে পারেন তার স্বামী হাছান আলী জমিদারের আরেকজন স্ত্রী রয়েছেন। অসাধারণ ব্যক্তিত্ববান, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, দৃঢ়চেতা নবাব ফয়জুন্নেছা এটি মানতে পারেননি। তিনি পৃথক থাকার জন্য সাড়ে ৩ একর জমির ওপর তার বিয়ের কাবিনের ১ লাখ ১ টাকা দিয়ে এই বাড়ি নির্মাণ করেন। বাড়িটি নির্মাণ করতে প্রায় তিন বছর সময় লাগে। ব্রিটিশ আমলে সিমেন্ট, রড, চুন ও সুরকি দিয়ে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। বাড়ির পশ্চিম পাশেই ১০ গম্বুজবিশিষ্ট একটি অনিন্দ্য স্থাপত্যশৈলীর পারিবারিক মসজিদ রয়েছে। মসজিদের পাশেই রয়েছে পারিবারিক কবরস্থান, যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন নবাব ফয়জুন্নেছাসহ তার বংশধরেরা। ২৫ সেপ্টেম্বর শনিবার লাকসামে এ প্রথম নবাব জমিদার বাড়িতে পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার।